• About me
  • Contact
  • Guest writer
BackpackEver.com
  • Destinations
    • Bangladesh
  • Tips
  • Gallery
  • Videos

হ্যাংসন ডুংঃ যে গুহার কোনো শেষ নেই

  • ভূমিকা

আদিম যুগের মানুষেরা বাইরের প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে না পেরে বিভিন্ন পাহাড় পর্বতের গুহাকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নিত। এখন আর সেই আদিম যুগ নেই। কিন্তু সেই গুহাগুলো এখনো রয়ে গেছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকতে থাকতে অনেক গুহা হয়ে উঠেছে রহস্যময় ও ভয়ংকর। এমনই একটি গুহা হচ্ছে হ্যাংসন ডুং, স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ হচ্ছে “cave of the mountain river”। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গুহা।

ভিয়েতনামের কোং বিন প্রদেশের বো টাচ জেলায় এই গুহাটি অবস্থিত। ১৯৯১ সালে স্থানীয় ‘হো-খানহ’ নামের এক ব্যক্তি গুহাটি প্রথম আবিষ্কার করেন। ভিয়েতনামের জাতীয় উদ্যান ফুং না কিং ব্যাংয়ের পাশেই হ্যাংসন ডুংয়ের অবস্থান।

  • হ্যাংসন ডুংয়ের বিবরন

গুহার ভিতরে রয়েছে ভয়ংকর সব প্রাণীর বসবাস। যারা গবেষণার কাজে গুহাটির ভিতরে গিয়েছিলেন তাদেরকে পদে পদে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। গুহার ভিতরে তাদের মোকাবেলা করতে হয় বিষধর সাপ, বড় মাকড়সা, অদ্ভুত সব প্রাণীদের সাথে। এছাড়া গুহার ভিতরে রয়েছে চেনা-অচেনা বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। গুহার মধ্যে পানির ফোয়ারা ছাড়াও রয়েছে একাধিক জঙ্গল। গুহার ভেতর সুরঙ্গপথের কোনো কমতি নেই। এসব সুরঙ্গ দিয়ে অনায়েসেই ভিয়েতনামের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে যাতায়াত করা যায়।

গুহাটি ১৯৯১ সালে আবিষ্কৃত হলেও দীর্ঘদিন এটিকে নিয়ে কোনো গবেষণা সংগঠন কাজ করেনি। স্থানীয় লোকজন গুহায় আসতে ভয় পেত, কারণ তারা এই গুহার তলদেশের নদী থেকে উচ্চস্বরে শব্দ শুনতে পেত। গুহাটি আবিষ্কারের পর এখনও এটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত নয়। কারণ এই গুহাটি অত্যন্ত বিপদজনক। এখানে পৃথিবীর অন্যতম মারাত্মক সব জীবজন্তু ও পোকামাকড়ের আবাস।

২০০৯ সালের ১০-১৪ এপ্রিল ব্রিটিশ গুহা গবেষণা সংগঠনের প্রধান হাওয়ার্ড ও ডেভ লেমবার্ট এই গুহাটি নিয়ে কাজ করেন। তাদের পরিসংখ্যানে দেখা যায় এ গুহার সবচেয়ে বড় কক্ষটির পরিমাপ ২০০ মিটার উচ্চ এবং ১৫০ মিটার চওড়া। গুহাটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার (৫.৬ মাইল)। এই লম্বা রাস্তার পুরোটাই পাথরের দেয়ালে মোড়া এবং আলো না থাকায় ভয়ঙ্কর অন্ধকারে ঢেকে রয়েছে। গুহাটি প্রায় ১৫০টি গুহার সমন্বয়ে গঠিত। বিভিন্ন গবেষক দল গুহাটির আয়তন পরিমাপ করতে পারলেও এর শেষ খুঁজে বের করতে পারেনি।

  • আবিষ্কারের গল্প

১৯৯১ সালে আগর কাঠের সন্ধানে এক জঙ্গল অভিযানে যান হো-খানহ। তার পরিবার ছিল খুবই গরীব। কাঠের সন্ধান না পাওয়ায় জঙ্গলের আরও গভীরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আগর কাঠের রজন সুগন্ধি তৈরিতে ব্যাবহৃত হয় এবং দামেও খুব মূল্যবান। জঙ্গলের এত গভীরে তখন কেউ আসার সাহস করত না, কারণ বন্য জন্তুর ভয় ছিল।

জঙ্গলের গভীরে প্রায় ২০ কিলোমিটার হাটার পর হো-খানহ পথ হারান। এরই মাঝে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। আশ্রয়ের সন্ধানে তিনি আশপাশে খুজতে থাকেন। একটি বড় বোল্ডারের দেখা মেলে। সেটার সাথেই পিঠ ঠেকিয়ে বসে পড়েন তিনি। তখনই একটি আশ্চর্য ব্যাপার ঘটে। পিছন থেকে দমকা হাওয়া আর পানির প্রবাহের ঝড়ো শব্দ পান তিনি। একটু সামনে এগিয়ে তিনি ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করেন। তখনই ঝোপঝাড় সরিয়ে পাহাড়ের গায়ে বিশাল দৈত্যাকৃতির গুহামুখের সন্ধান পান তিনি। সাথে আরও লক্ষ্য করেন একটি ভূগর্ভস্থ নদী গুহার অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে।

হো-খানহ বেশ অবাক হন। তিনি এই অঞ্চলের অনেক গুহার সন্ধান জানেন, কিন্তু এটাকে তাঁর কাছে একদমই ব্যতিক্রম মনে হয়। দেখেই বোঝা যায় কোনও মানুষের পা এখনও পড়েনি এখানে। গুহার ভিতরে একদম ঘন কালো অন্ধকার। বাতাস প্রবাহের অনুভুতি দিয়ে তাঁর কাছে মনে হয় অনেক বড় এবং প্রশস্ত কোনও জায়গায় তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে দড়ি এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি না থাকায় গুহার ভিতরে আর প্রবেশের সাহস তার হয়নি। একদিন জঙ্গলে কাটিয়ে পরদিন তিনি গ্রামে ফিরে যান।

যে উদ্দেশ্যে জঙ্গলে যাওয়া সেই মূল্যবান আগর কাঠের সন্ধান তাঁর মেলেনি কিন্তু তার চেয়েও দামী অভিজ্ঞতা তিনি সাথে করে নিয়ে এসেছেন। গ্রামের মানুষের কাছে তাঁর এই আবিষ্কারের কথা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু কেউ তাঁর কথা বিশ্বাস করেনি। বাস্তব প্রমানের জন্য আরও একবার গ্রামের লোকজন সহকারে তিনি জঙ্গলে প্রবেশ করেন, কিন্তু গুহামুখের রাস্তা তিনি হারিয়ে ফেলেন। গভীর জঙ্গলের ভিতরে মানুষের কোনও পায়ে চলা পথের ট্র্যাক না থাকায় কাঙ্খিত সেই জায়গায় আর যাওয়া হল না। হো-খানহের ভাষায়,

“I wanted to prove my word, but I couldn’t remember the way to the cave. It was a wild place, with no human tracks.”

গল্পটি গ্রামের মানুষের মাঝেই রয়ে গেল। হো-খানহের ধনী হওয়ার স্বপ্ন, স্বপ্নই রয়ে গেল। তিনি তাঁর দৈনন্দিন কাজ, সেই আগর কাঠের সন্ধান আর ক্ষেত খামারীর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। কিন্তু মনের ভিতরে তিনি আশা ছেড়ে দেননি যে একদিন তিনি আবার গুহাটির সন্ধান লাভ করবেন।

  • পূনরায় অনুসন্ধান

২০০৯ সালে “ব্রিটিশ কেইভ রিসার্চ এ্যাসোসিয়েশনের” একদল সদস্য ভিয়েতনাম আসে নতুন কিছু গুহার সন্ধান লাভের আশায়। দলটি এই সময় তাঁর সাথে যোগাযোগ করে ১৮ বছর আগে তাঁর আবিষ্কারের গল্প শুনে। গুহাটি পূনরায় খুজে বের করতে হো-খানহকে তাদের অভিযানের গাইড হওয়ার প্রস্তাব দেয়। তাদের প্রথম অভিযানে তারা ১১টি নতুন এবং অনাবিষ্কৃত গুহার সন্ধান পান। এর ভিতরে দুটি গুহার নাম রাখা হয় হো-খানহ এবং তাঁর মেয়ে, থাই হোয়ার নামে। কিন্তু সন ডুং এর সন্ধান তখনও পাওয়া যায়নি। আরও দুটি ব্যর্থ অভিযানের পর ব্রিটিশ অভিযাত্রী দল আশা ছেড়ে দেন। ভিয়েতনাম ছাড়ার আগে তারা হো-খানহকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে বলেন এবং কোনও সন্ধান পেলে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলে যায়।

২০০৯ সালের এক শীতের সকালে হো-খানহ আরও একবার জঙ্গলে প্রবেশ করেন তাঁর স্মৃতি ঝালিয়ে একবার শেষ চেষ্টা চালানোর জন্য। এবার তিনি সফল হন। খুজে পান সেই দৈত্যাকৃতির গুহামুখ। এবার আর তিনি পথের নিশানা না রাখার ভুল করেননি। গ্রামে ফিরেই তিনি ব্রিটিশ দলটির সাথে যোগাযোগ করেন। ২০১০ সালের ১৪ই এপ্রিল “ব্রিটিশ কেইভ রিসার্চ এ্যাসোসিয়েশন” অবশেষে খুজে পান এতদিন ধরে যার সন্ধান তারা করে আসছিল। সাধারন মানুষের কাছে প্রথম সন ডুং এর কোনও ছবি প্রকাশ পায়। আবিষ্কারের সাথে সাথেই এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়।

হো-খানহের স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবের মুখ দেখে। কাঠ কাটার কাজ তিনি এখন ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি একজন কেইভ গাইড, পরিবেশ সংরক্ষনবাদী এবং নিজস্ব ট্যুর ব্যাবসা পরিচালনা করেন।

adventure Cave cave exploration Cave History Earth explore Globetrotter Green Hang Son Doong Hang Son Doong Cave অভিযান History jungle Largest Cave Life National Geographic Nature Travel এডভেঞ্চার গুহা গুহা অভিযান জঙ্গল ট্র্যাভেল হ্যাং সোন ডুং গুহা
Previous article আমাজনের হারানো শহরঃ এল-ডোরাডো
Next article মুভি রিভিউঃ মাউন্টেনস অফ দ্যা মুন (১৯৯০)

Similar posts from related categories

আমাজনের হারানো শহরঃ এল-ডোরাডো

আমাজনের হারানো শহরঃ এল-ডোরাডো

মুভি রিভিউঃ মাউন্টেনস অফ দ্যা মুন (১৯৯০)

মুভি রিভিউঃ মাউন্টেনস অফ দ্যা মুন (১৯৯০)

Shortcut

  1. Bangladesh
  2. Destinations
  3. Exploration
  4. Featured
  5. Malaysia
  1. Movies
  2. Reviews
  3. Singapore
  4. Tips
Banner

Tag Cloud

2018 1
7/11 1
adventure 3
Adventure Movie 1
Airbnb 1
amazon 1
amazon adventure 1
amazon explore 1
Asia 2
backpack travelling 2
backpackever 2
Bangladesh 2
best places to visit in singapore 2
best tourist attractions in singapore 1
best tourist attractions near kuala lumpur 1
best tourist destinations in malaysia 1
botanical garden 1
Cave 1
cave exploration 2
Cave History 1
cheap travel tips 1
cheap travelling 1
couchsurfing 1
Dhaka 1
Earth 1
el dorado 1
Expedition 1
explore 3
extreme adventure in cave 1
free music 1
Globetrotter 1
gold city 1
Green 1
gua tempurung 1
gua tempurung 2020 1
Hang Son Doong 1
Hang Son Doong Cave অভিযান 1
History 2
how to get taman negara 1
how to travel in cheap way 1
how to travel singapore in cheap way 2
ipoh 1
jungle 3
jungle trekking 2
kuala tahan 1
Largest Cave 1
Life 1
limestone cave 1
longest canopywalk 1
lost city 1
lost city of z 1
malaysia 2
MALAYSIA | Gua Tempurung in Ipoh | Cave exploration | 2019 1
Mountains of the moon 1
music 1
National Geographic 1
Nature 1
oldest rainforest in world 1
Photography 1
places to visit in singapore 1
places to visit singapore 1
royalty free 1
singapore 3
singapore 2018 1
singapore botanical garden 1
singapore tour guide 1
Singapore Tourist Pass 1
singapore travel guide 1
Soundcloud 1
taman negara 1
taman negara rainforest 1
tempurung cave 1
ThingsToDo 1
tips 1
top tourist attractions in malaysia 1
top tourist destinations in malaysia 1
Top5 1
tourist attractions in malaysia 1
tourist destinations in singapore 1
tourist places in ipoh 1
track 1
Travel 2
travel blog in bangla 1
travel tips 1
travel vlog 1
unesco world heritage singapore 1
unesco world heritage site 1
Victoria Waterfall 1
অভিযান 1
আমাজন 1
এডভেঞ্চার 2
এল ডোর‍্যাডো 1
ওয়াচ টাওয়ার 1
কম খরচে সিংগাপুর ভ্রমণের ৩টি কৌশল 1
গুহা 1
গুহা অভিযান 1
জঙ্গল 2
জাদুকাটা নদী 1
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ গাইড 1
টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ 1
টেকেরঘাট 1
ট্র্যাভেল 2
তামান নেগারা 1
তামান নেগারা রেইনফরেস্ট 1
তাহিরপুর 1
নিলাদ্রি লেক 1
বারিক টিলা 1
বারিক্কা টিলা 1
বোটানিক্যাল গার্ডেন 1
মাউন্টেনস অফ দ্যা মুন 1
লাখমাছড়া ঝর্না 1
শিমুল বাগান 1
শ্রীপুর বাজার 1
সিংগাপুরে আমাদের ৭ দিন 1
সিঙ্গাপুর 2
সিঙ্গাপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন 2
সিঙ্গাপুর ভ্রমন 1
সিলেট 1
সুনামগঞ্জ 1
সোয়াম্প ফরেস্ট 1
হারানো শহর 1
হ্যাং সোন ডুং গুহা 1

Newsletter

Banner

Timeline

09
Dec 22:00

মুভি রিভিউঃ মাউন্টেনস অফ দ্যা মুন (১৯৯০)

04
Dec 12:50

হ্যাংসন ডুংঃ যে গুহার কোনো শেষ নেই

02
Dec 23:32

আমাজনের হারানো শহরঃ এল-ডোরাডো

Search…

Instagram

Load More...
Follow on Instagram
© 2017 Copyright BackpackEver. All Rights reserved.
Close Window

Loading, Please Wait!

This may take a second or two. Loading, Please Wait!