দিগন্ত বিস্তৃত পানি, সারি সারি পাহাড়, স্বচ্ছ নীল আকাশে মেঘের খেলা আর যেদিকে চোখ যায় প্রকৃতির নির্মল সৌন্দর্য এই সবকিছুর ই আরেক নাম যেন টাঙ্গুয়ার হাওর। কর্মব্যস্ত এই জীবনে আমরা প্রায়ই হাঁপিয়ে উঠি। আমার তো প্রায় প্রায়ই মন চায় দৈনন্দিন জীবন থেকে ছুটি নিয়ে খুব অল্প সময়ের জন্য প্রকৃতির সান্নিদ্ধে কাটিয়ে আসতে। আর তাই হঠাৎ হঠাৎ করেই ছুটে যাই কোথাও একটা। এবার আমার গন্তব্য ছিল টাঙ্গুয়ার হাওর। যাওয়ার আগে আমার কোন ধারণাই ছিল না যে কি দেখতে যাচ্ছি আমি। কিন্তু ওখানে যেয়ে আমি যা কিছু দেখেছি এবং খুব ছোট্ট এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা টা সারাজীবন মনে রাখার মত। আর তাই টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমন- আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে আজকের লিখা।
টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলায় অবস্থিত। আপনি যদি সিলেট কিংবা সুনামগঞ্জের কাছাকাছি থাকেন তাহলে একদিনে যেয়েই ঘুরে আসতে পারেন। কিন্তু আমার মনে হয় এই ট্যুরটার প্রধান আকর্ষণ ই হল ট্রলার বা নৌকায় করে ঘুরা এবং রাতে হাওরের নির্জনতা উপভোগ করা। যদি আপনার মোশন সিকনেস না থাকে তাহলে আপনি রাতে নৌকায় বা ট্রলারে ও থাকতে পারেন। এই ট্যুর টা আমি একটা ট্যুর গ্রুপের সাথে করেছিলাম। আমরা রাতে ঢাকার ফকিরাপুল বাস কাউনটার থেকে হানিফ বাসে করে রওনা হই সুনামগঞ্জের উদ্দেশে। আপনি হানিফ ছাড়া আরও অনেক বাস পাবেন। এখানে একটি কথা বলা খুব জরুরী যে হানিফ বাসের সার্ভিস ও রাস্তায় চালানোর ধরণ খুবই বাজে।
যাই হোক বাস থেকে সুনামগঞ্জ সুরমা ব্রিজের কাছে নামতে হবে। সেখানে পৌঁছাতে আনুমানিক ভোর ৬-৭ টা বাজবে। ব্রিজের কাছেই লেগুনা পাওয়া যাবে যেগুলোতে করে যেতে হবে তাহিরপুর বাজার (ট্রলারঘাট)।
সুরমা ব্রিজ থেকে ট্রলারঘাট যাওয়ার পথে
ভোরবেলা বাস থেকে নামার পর এমন অপূর্ব সুন্দর প্রকৃতি দেখে আমার সারা রাতের জার্নির ক্লান্তি এক নিমিষে যেন উধাও হয়ে গেল। ভোরের ঠাণ্ডা বাতাস গায়ে লাগিয়ে লেগুনায় করে আমরা যাচ্ছি ট্রলারঘাট। ট্রলারঘাটে পৌঁছাতে ১.৩০ ঘণ্টা মত লাগে। চারপাশ দেখতে দেখতে সময়টা কখন চলে যায় টের ই পাওয়া যায়না। কিন্তু এই সময়টা যে কতটা উপভোগ্য তা যে এই রাস্তাটা দিয়ে যায়নি সে কখনো বুঝবে না। পীচঢালাই রাস্তা আর দুই পাশে সবুজ ঘাসের মাঠ। মাঝে মাঝে একটু পানি আর তার মধ্যে ফুটে আছে লাল পদ্ম। কিংবা চলতে চলতে দেখতে পাবেন এক ঝাঁক হাঁস পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখানে প্রকৃতি এবং চারপাশ যেন সৌন্দর্যের হাজারো ডালি নিয়ে বসে আছে!!!
রাস্তায় হঠাৎ করে আমাদের লেগুনা গেল নষ্ট হয়ে। আর কি!!! এডভেঞ্চারের ষোল কলা পূর্ণ করতে আমরা সবাই রাস্তায় নেমে এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করছি। তাহিরপুর গ্রাম তখন সবে জেগে উঠেছে। ওমা কিছুক্ষণ পর দেখি কতগুলো বাচ্চা, ছেলে-মেয়ে রাস্তায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আমাদেরকে দেখতে। আর উৎসুক জনতার সংখ্যা মুহূর্তে মুহূর্তে বাড়ছেই। সে এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। আমরা ও স্থানীয় কয়েকজনের সাথে গল্প করে আমাদের সময়টা কাটিয়ে দিলাম।
উৎসুক জনতা
অবশেষে আমাদের ড্রাইভার অনেকক্ষণ চেষ্টার পরে গাড়ি ঠিক করতে পারলো এবং আমরা আবার রওয়ানা হলাম ট্রলার ঘাটের দিকে। ট্রলার ঘাটে যেয়ে দেখি খুব সুন্দর এবং বেশ বড় সাইজের একটি ট্রলার ঠিক করা হয়েছে আমাদের হাওর ভ্রমণের জন্য। ট্রলারটা বড় হওয়ায় আমার মনটা বেশ হালকা হয়ে গেল। কারণ একে তো আমি সাঁতার জানিনা তার ওপর হাওরের আবহাওয়া যখন তখন খারাপ হয়ে যায়। তাই মনে একটু একটু যা ভয় ছিল এখন আর তা একদম নেই। ট্রলারে একটি কেবিন ছিল সবার ব্যাগ রাখার জন্য। আমরা সবাই সেখানে ব্যাগ রেখে চলে গেলাম বাজারেরই একটি হোটেলে নাস্তা করতে। যেহেতু এই এলাকায় খুব অল্প কয়েকদিন যাবত টুরিস্ট যাচ্ছে তাই এখানে বাজারে ভালো মানের কোন হোটেল বা রেস্টুরেন্ট নেই। এসব দোকানে খাবার দাবারের মান ও স্বাদ খুব একটা ভালো না। আমি যেহেতু একটি ট্যুর কোম্পানির সাথে গিয়েছিলাম তাই খাবার-দাবার নিয়ে আমার কোন চিন্তা করতে হয়নি। আপনারা যদি নিজেরা গ্রুপ করে যান তাহলে নৌকায় রান্না করতে পারেন। নৌকা ভাড়া করার সময়ই এই বিষয়ে কথা বলে নিতে হয়। তাহলে নৌকার মাঝিরাই রান্নার ব্যবস্থা করে। সেক্ষেত্রে তাহিরপুর বাজার থেকেই কয়দিন থাকবেন, কতজন লোক সেই অনুযায়ী খাবার ও পানি কিনে নিয়ে ট্রলারে উঠতে হবে।
যাই হোক নাস্তা সেরে আমরা উঠে গেলাম আমাদের ট্রলারে। শুরু হল হাওর ভ্রমণ। চারিদিকে পানি আর পানি। তার মধ্যে ছুটে চলেছে আমাদের ট্রলার। সেদিন আবহাওয়া টা ছিল অসাধারণ। সকালে খানিকটা বৃষ্টি হয়ে আকাশ ছিল একদম পরিষ্কার। না রোদ না বৃষ্টি। আমি তো ট্রলারের ছাদে বসে আকাশে মেঘের খেলা দেখছিলাম। নীল আকাশে সাদা মেঘের কত ঢং।
ট্রলার থেকে হাওরের দৃশ্য
পানির মধ্যে মধ্যে একটুখানি সমতল জায়গা আর তার মধ্যে একটি–দুটি বাড়ি। স্বাভাবিকভাবেই এখানকার লোকজনের যাওয়া আসার একমাত্র বাহন নৌকা। তাই সব বাড়ির সামনেই নৌকা বাঁধা। চারপাশটা যেন ছবির মত সুন্দর।
ট্রলার থেকে হাওরের দৃশ্য
হাওরের ঠাণ্ডা বাতাস, রোদের তাপহীন ঝলমলে দিন আর চারপাশের এই অসাধারণ দৃশ্য- এই সব দেখতে দেখতে আমরা ছুটে চলেছি বারিক্কা টিলার উদ্দেশে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে বেড়াতে গিয়ে আশেপাশে যে যে জায়গাগুলো দেখতে পারেনঃ
১. বারিক্কা টিলা,
২. জাদুকাটা নদী,
৩. ওয়াচ টাওয়ার,
৪. শ্রীপুর বাজার,
৫. শিমুল বাগান,
৬. নিলাদ্রি লেক,
৭. লাখমাছড়া ঝর্না
ট্রলার থেকে নেমে মিনিট পাঁচেক মত হেঁটে পৌঁছে গেলাম বারিক টিলার একদম চূড়ায়। টিলা বেয়ে উঠে কিছুটা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু যখন ই চারপাশে তাকালাম সব ক্লান্তি উধাও হয়ে গেল। দূরে মেঘালয়ের বিশাল বিশাল পাহাড় যেন আকাশ ছুঁয়ে আছে। সবুজ টিলার উপর দাঁড়িয়ে নিচের জাদুকাটা নদীর পুরো ভিউটা দেখা যায়। চারপাশ ঘিরে আছে সবুজ পাহাড় আর টিলার গা বেয়ে চলেছে জাদুকাটা নদী- এক কথায় অসাধারণ। টিলা থেকে নেমে কাছ থেকে উপভোগ করতে পারেন জাদুকাটা নদীর অপরূপ রুপ। এর পানি একদম সাগরের পানির মত নীল আর স্বচ্ছ। পাড়ে বালি থাকায় এক মুহূর্তের জন্য আমার মনে হচ্ছিলো আমি যেন ছোট্ট কোন সাগরের পাড়েই দাঁড়িয়ে আছি।
টিলা থেকে নেমেই দেখলাম একটি চায়ের দোকান। সেখানে চা-সিঙ্গারা খেয়ে রওয়ানা হলাম শিমুল বাগানের দিকে। আপনাদের সাথে যদি স্থানীয় কেউ না থাকে তাহলে এই চায়ের দোকানগুলোতে জিজ্ঞেস করলে এরাই বলে দিতে পারবে কিভাবে যেতে হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে সারি সারি গাছ। আর গাছের লাল ফুলগুলো দেখে মনে হয় মাথার ওপরে লাল রঙের পর্দা টানানো। ছবির মত সুন্দর শিমুল বাগান ঘুরে এসে আমরা আবার ট্রলারে উঠলাম।
তারপর চলে গেলাম ওয়াচ টাওয়ারের কাছে। ওয়াচ টাওয়ারের ওপরে উঠে আপনি পুরো হাওর এলাকাটা দেখতে পারেন। অবশ্য আমরা ওয়াচ টাওয়ারের নীচের ঠাণ্ডা পানি আর সোয়াম্প ফরেস্টের অসাধারণ দৃশ্য দেখে আগেই পানিতে ঝাঁপ দিয়ে দিয়েছি। যারা সাঁতার পারে তারা তো সাঁতরাচ্ছেই আর আমার মত যারা সাঁতার পারেনা তারা ও লাইফ জ্যাকেট নিয়ে নেমে পরেছে ঠাণ্ডা পানিতে। সবাই গোসল করে আবার উঠে বসলাম ট্রলারে। মেয়েদের জন্য একটি কটেজ ঠিক করা হয়েছিলো। আমরা সেখানেই গেলাম এবং দুপুরের খাবার খেয়ে যে যার মত বিকেল পর্যন্ত বিশ্রাম করলাম।
বিকেলে সবাই ট্রলারের ছাদে বসে গল্প করছি এবং এখন আমরা যাচ্ছি এখানকার বড় একটি বাজারে (শ্রীপুর) বিকেলের নাস্তা করতে। বিকেলে ট্রলারের ছাদে বসে চারপাশ দেখছি। সকালে এক রকম ভালো লাগা আর বিকেলে সম্পূর্ণ অন্য রকম। শেষ বিকেলের মিষ্টি রোদ, হাওরের শীতল বাতাস আর চারিদিকের অপূর্ব পরিবেশ আমাকে যেন অন্য এক জগতে নিয়ে গেছে। ট্রলারের কিনারে বসে পানিতে পা ছুঁই ছুঁই করে শুধু দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কত সুন্দর আমাদের এই ছোট্ট দেশটা। সূর্য ডুবু ডুবু করছে। সারা আকাশে রঙ বেরঙের মেঘের খেলা। হাজারো রঙ্গে আকাশ রঙিন হয়ে আছে। আকাশ দেখবো না পানি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না।
হাওরে সূর্যাস্ত
অবশেষে পৌঁছালাম শ্রীপুর বাজার। সেখানেও এক কাহিনী। পুরো ঘাট ভরা মানুষ। মনে হচ্ছে যেন আমাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে দাঁড়িয়ে আছে। যাই হোক আমরা নেমে একটি চায়ের দোকানে ঢুকে চা নাস্তা খেলাম। সবাই মিলে কিছুক্ষণ গল্প করে ফের উঠলাম ট্রলারে। রাতের হাওর- এ যে আরেক রুপ!!! সকালে, বিকেলে, রাতে একেক সময় সুন্দরী হাওর যেন একেক রূপ ধারণ করে। আকাশ একদম পরিষ্কার ছিল। হাজারো তারার মেলা দেখতে দেখতে চললাম কটেজের দিকে।
কটেজে ফিরে জানলাম আমাদের রাতের খাবার তৈরি হতে একটু দেরি হবে। আর কি ট্রলারের ছাদে সবাই গল্প জুড়ে দিলাম। অন্ধকার রাত, তারার মেলা আর এরই মধ্যে কয়েকজন শুরু করল গলা ছেড়ে গান। পৃথিবীর বুকে যেন অপার্থিব পরিবেশ। আমার কোন ভাষা নেই সেই সময়টাকে বর্ণনা করার। কেউ কেউ অবশ্য এই সময়টাকে ঘুমের উপযুক্ত সময় মনে করে প্রকৃতির কোলে গা এলিয়ে কিছুক্ষণ ঘুমিয়েও নিয়েছে।
অবশেষে খাবার এলো। খেয়ে-দেয়ে আমরা মেয়েরা ঘুমালাম কটেজে আর ছেলেরা ঘুমাল ট্রলারে। এভাবেই শেষ হল হাওরে আমাদের প্রথম রাত।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা সেরে সকাল ১০ টা নাগাদ ট্রলারে উঠলাম সবাই। গন্তব্য- কেয়ারি লাইমস্টোন লেক। তবে এটিকে নিলাদ্রি লেক নামেই সবাই চেনে। আবার শুরু হল ট্রলারে করে হাওরের মধ্যে ছুটে চলা। সেই একই হাওর, একই পরিবেশ তবু ভালো লাগার যেন শেষ হয়না। আসলে হাওরের চারপাশের পরিবেশ, প্রকৃতি, সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা- সবকিছু এত স্নিগ্ধ আর এত সুন্দর যে চোখ মন সব এক অদ্ভুত প্রশান্তিতে ভরে যায়।
দুপুর নাগাদ আমরা পৌঁছালাম টেকেরঘাট। ১০ মিনিট মত হেঁটে গেলাম নিলাদ্রি লেকের কাছে।
নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমি এত সুন্দর জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। নিলাদ্রি লেক- অপরূপ রুপের অন্য এক নাম। বিশাল সবুজ পাহাড় ঘেরা লেকের স্বচ্ছ নীল পানি আর অন্য পাশে ঢেউ খেলানো উঁচু-নিচু সবুজ টিলা, মাটির চিকন রাস্তা সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিলো বইয়ে পড়া কোন কবিতার দৃশ্য। কিন্তু সেই মুহূর্তে মাথার ওপরের কড়া রোদ বেশ যন্ত্রণা করছিলো।
আমি হাঁটতে হাঁটতে কাছাকাছি একটা বাজারে চলে গেলাম। নাম- বরছড়া বাজার। সেখানে গিয়ে হালকা কিছু খেয়ে আবার চলে আসলাম লেকের কাছে। আস্তে আস্তে যখন রোদের তাপ কমছিল তখন নেমে পরলাম লেকের ঠাণ্ডা পানিতে। সঙ্গী আমার লাইফ জ্যাকেট। গোসল সেরে গেলাম বাজারে সেখানে সবাই মিলে দুপুরের খাবার খেয়ে আবার আসলাম লেকের কাছে। রোদ তখন কমে গিয়ে চারিদিকে বিকেলের স্নিগ্ধতা। টিলার উপরে উঠে চারিদিকে দেখে অপূর্ব লাগছিলো। হাওর ভ্রমনের পরে এটা ছিল আমার এই ট্যুরের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত।
এখানে বেশ কিছুক্ষণ থেকে আমরা ট্রলারে ফিরে গেলাম এবং এখন আমাদের গন্তব্য- ফেলে আসা ঢাকা।
আমার টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনের ভিডিও দেখতে পারেন এখানে- https://www.youtube.com/watch?v=JSTMjRGq93g&t=784s
বর্ষাকাল ও শীতকাল- এই দুই সময়ে হাওরের রূপ দুই রকম। বর্ষাকালে চারিদিকে সবুজ আর পানির পরিমাণও অনেক বেশি থাকে। আর শীতকালে অনেক রকমের পাখির সমাহার থাকে। সুতরাং আপনি এই দুই সময়েই যেতে পারেন। তবে যদি একবারই যেতে চান তাহলে বর্ষাকাল হল হাওরের পরিপূর্ণ রূপ দেখার উপযুক্ত সময়।
আমি যেহেতু ট্যুর কোম্পানির সাথে গিয়েছি তাই আমার খরচ পরেছে- ৪০০০ টাকা। তবে আপনারা যদি নিজেরা গ্রুপ করে যান সেক্ষেত্রে খরচ অনেক কম হবে। আনুমানিক ২৫০০-৩০০০ টাকা (সর্বোচ্চ)।
# সাঁতার জানেন বা না জানেন হাওরে যাওয়ার সময় সাথে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট রাখবেন।
# নিলাদ্রি লেকে এ যাবত অনেকগুলো দুর্ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই হয়তো জানেন না যে নিলাদ্রি লেক থেকে পাথর উত্তোলনের ফলে এটি অত্যন্ত গভীর যা স্বাভাবিকভাবে ধারণা করা যায়না। তাই এই লেকে নামলে একদম কাছাকাছি তীরের কাছে থাকাটাই নিরাপদ। আনন্দে খুব বেশী উত্তেজনার ফলে যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখাটা জরুরী।
# নিজেদের ট্রলার বা নৌকায় ময়লা ফেলার একটি বিন রাখুন এবং সবাই সেখানে ময়লা ফেলুন। দয়া করে ভুলেও কেউ হাওরের পানিতে চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেট কিংবা অন্য কোন ধরনের ময়লা ফেলে হাওরের সৌন্দর্যটা নষ্ট করবেন না।
# টেকেরঘাট প্রতি মঙ্গলবার সকাল ১০-৪ টা পর্যন্ত বাজার বসে। ওই সময়ে বাংলাদেশ ও ভারত বর্ডার উন্মুক্ত থাকে। যদি সম্ভব হয় ট্যুর প্ল্যান টা মঙ্গলবার হিসেব করে করবেন।
# হাতে যদি বেশি সময় থাকে তাহলে সুনামগঞ্জ শহরে গিয়ে হাসন রাজার বাড়ি ও মিউজিয়াম দেখে আসতে পারেন।
আশা করছি টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ এর আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখা এই আর্টিকেল আপনার পরবর্তী হাওর ভ্রমণের ক্ষেত্রে কাজে দেবে। এছাড়াও টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ নিয়ে যদি আপনার আরও কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন আমাকে। আমি অবশ্যই আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে চেষ্টা করবো আপনাকে সাহায্য করতে।
খুব ভালো থাকবেন। খুব শীঘ্রই আমার ঘুরে বেড়ানো নতুন কোন জায়গার গল্প নিয়ে হাজির হয়ে যাবো। আল্লাহ হাফেজ। 🙂