অনেকদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল ছবির মতন সাজানো গুছানো ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু এর খরচের কথা চিন্তা করে আর হচ্ছিলো না। অবশেষে কম খরচে কিভাবে সিঙ্গাপুর ঘুরে আসা যায় সেই প্ল্যান করে সিঙ্গাপুরের রুপ দেখার জন্য রেডি হয়ে গেলাম।
নতুন একটি দেশে গেলে কথেকে কিভাবে কোথায় গেলে সহজে জায়গাগুলো ঘুরে দেখা যাবে সেটা প্ল্যান করতে অনেকেই হিমশিম খায়। আবার এই প্ল্যানের ওপর অনেকখানি নির্ভর করে ট্যুর খরচ, সময় ইত্যাদি অনেক কিছু। আর তাই আমরা কিভাবে ৭ দিন সিঙ্গাপুরে কাটিয়েছি এবং এর বেশীরভাগ দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখেছি সেটাই লিখছি আজকে। আমার আর মুন্নার ঘুরার ধরন একটু আলাদা। তবে আশা করি আমাদের এই ট্যুর প্ল্যান আপনাদের কাজে লাগবে কিছুটা হলেও।
আমাদের জার্নি শুরু হয়েছিল ২৩ ডিসেম্বর। এভাবেই প্ল্যান করেছিলাম যে ১ সপ্তাহ সিঙ্গাপুরে থাকবো। তারপরে থার্টি ফাস্ট নাইট এবং নিউ ইয়ার সিঙ্গাপুরে কাটিয়ে দেশে ফিরবো।
২৩ ডিসেম্বরঃ
২৩ তারিখ রাত ৯ টায় আমাদের প্লেন ছাড়ে ঢাকা থেকে। সিঙ্গাপুর চাঙ্গি এয়ারপোর্টে পৌঁছাই রাত ১.১৫ টায় (সিঙ্গাপুর সময় ৩.১৫ টায়)। ঢাকা থেকে সিঙ্গাপুরের সময় ২ ঘন্টা আগানো।
চাঙ্গি এয়ারপোর্টে নেমেই চোখ বড় বড় করে খালি চারপাশে দেখছি। ফ্লোরের কার্পেট থেকে শুরু করে, গাছের পাতা, ফুল, পানি খাওয়ার টেপ সব অদ্ভুত। মনে হচ্ছে এক রুপকথার দেশে চলে আসছি। এয়ারপোর্টের ফুল, পাতা এগুলো দেখে আমি অনেকক্ষণ বুঝতেই পারিনাই যে এগুলো সত্যি না প্লাস্টিক।
২৪ ডিসেম্বরঃ
ভোর ৫ টা পর্যন্ত আমরা চাঙ্গি এয়ারপোর্ট ঘুরে দেখে ৫.৩০ এ ইমিগ্রেশন শেষ করে বের হই। তারপর ফুড কোর্টে গিয়ে একটা সেট মেন্যু অর্ডার করি- ১টা স্যান্ডউইচ, ১টা ডিম সেদ্ধ আর ১ কাপ কফি। সিঙ্গাপুরে খাবারের খরচ কত সেটা নিয়ে আমার আরেকটা আর্টিকেল আছে ঐটা পড়ে দেখতে পারেন।
এখন আমরা যাচ্ছি Wilki Road এ। সেখানে couchsurfing এর মাধ্যমে বুকিং করা আছে। এয়ারপোর্ট থেকে বুগিস এমারটি টিকেট কেটে নিলাম একেজনের জন্য ৪.০৮ ডলার দিয়ে।
একজন ফ্রেঞ্চ লোকের বাসায় উঠেছি আমরা। সকাল ৯ টার দিকে পৌঁছালাম সেই বাসায়। রাস্তায় আমাদের অনেক খুঁজতে হয়েছে। কারন আমরা ভুল করেছি এয়ারপোর্ট থেকে সিম কিনে আনিনি। এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন যে এয়ারপোর্ট থেকে সিম কিনে নেয়ার কথা। কারন ওখানে আমাদের দেশের মত একে ওকে জিজ্ঞেস করে কোন জায়গায় পৌঁছানো যায়না। গুগল ম্যাপ ছাড়া কোন গতিই নাই। আমরা Wilki Road থেকে ৫ মিনিটের দুরত্তে দাঁড়িয়ে ৩-৪ জন মানুষকে জিজ্ঞেস করেছি। কিন্তু কেউ চিনেনা। অবশেষে এক পেপার ওয়ালাকে জিজ্ঞেস করায় সে বলে দিয়েছিলো।
তারপর বাসায় পৌঁছে ফ্রেশ হলাম, রেস্ট নিলাম। একটু অদ্ভুত লাগছিলো কারন এরকম করে অপরিচিত কারো বাসায় হঠাৎ করে থাকতে একটু কেমন যেন লাগছিলো আবার ইন্টারেস্টিং ও লাগছিলো। যাই হোক দুপুর পর্যন্ত ঘুমিয়ে তারপর ২.৩০ টার দিকে বের হলাম সিঙ্গাপুরের রাস্তায়।
আজকে বিশেষ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান নেই। শুধু কাছাকাছি হেঁটে দেখবো। গেলাম লিটল ইন্ডিয়া, আরব ষ্ট্রীট এবং এর আশেপাশের এয়াকায়। আরব ষ্ট্রীটের রাস্তার দেয়ালগুলো খুব সুন্দর পেইন্টিং করা। ওখানে একটি দোকানে সেলফি কফি পাওয়া যায়। গেলাম সেইখানে আর সেলফি কফি দেখে তো আমি সেই খুশি। তারপর বাসায় আসলাম রাত ৯ টায়। আবার একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে আমাদের হোস্টের সাথে একত্রে রাতে খাওয়ার জন্য বের হলাম। কাছাকাছি একটা ফুড জাংশনে গেলাম আমরা। আমি চিকেন রাইস নিলাম। খেয়ে ৩ জন রাতের রাস্তায় এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ালাম। একটা চার্চে গেলাম, রিভারসাইড পুলে গেলাম। বাসায় ফিরলাম রাত ১২ টায়।
২৫ ডিসেম্বরঃ
ঘুম থেকে আস্তে ধীরে উঠে সকাল ১১ টায় বের হয়ে কাছাকছি মেকডনাল্ডস এ সকালের নাস্তা করলাম। আজকে বেশ কয়েকটা মিউজিয়াম এবং লাইব্রেরী দেখার প্ল্যান। প্রথমে গেলাম সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল মিউজিয়ামে। এটা খুব বেশি ভালো লাগেনি আমার। তারপরে গেলাম পেরানাকান মিউজিয়ামে। এই মিউজিয়াম টা অসম্ভব ভালো লেগেছে আমার। অনেকক্ষণ ধরে ঘুরে দেখে তারপরে গেলাম এস্প্লান্ডেড, কঞ্চারট হলে। সেগুলো দেখে আসলাম সিঙ্গাপুর বললেই যে ছবিটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেখানে- মেরিনা বে। পুরো বিকেল টা মেরিনা বের উল্টা পাশের এক বিল্ডিঙের ছাদে কাটালাম। সূর্যাস্ত দেখলাম, মেরিনা বের অসাধারন লাইটিং দেখলাম, সিঙ্গাপুর রিভার দেখলাম। ওপর থেকেই দেখতে পেলাম নদীর ওপরে স্টেজে কনসার্ট হচ্ছে। তারপরে নেমে গেলাম কনসার্ট দেখতে। কিছুক্ষণ সেখানে থেকে গেলাম অরচারড রোডে। অবশেষে রাতের খাবার খেয়ে ক্লান্ত পা নিয়ে ফিরলাম বাসায়।
২৬ ডিসেম্বরঃ
২৬ তারিখ সকালে বের হয়ে নাশতা করে গেলাম নেশানল লাইব্রেরী তে। ওদের লাইব্রেরী টা এতো বড়, এতো সুন্দর সব বইয়ের কালেকশন, এতো গুছানো যে ওখান থেকে বের হতেই ইচ্ছা করছিল না। বইপ্রেমি যেকোনো মানুষ এখানে সারাদিন মহানন্দে কাটিয়ে দিতে পারে। যাক এখান থেকে বের হয়ে গেলাম বোটানিক্যাল গার্ডেনে। সারাটাদিন বোটানিক্যাল গার্ডেনে যে কি অসাধারন সময় কাটিয়েছি, কত্তকিছু দেখেছি সেটা জানতে আমার এই আর্টিকেল টা পড়তে পারেন- https://backpackever.com/%e0%a6%b8%e0%a6%bf%e0%a6%99%e0%a7%8d%e0%a6%97%e0%a6%be%e0%a6%aa%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a7%8b%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a6%bf%e0%a6%95%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%b2-%e0%a6%97%e0%a6%be/
তারপর সেখান থেকে সন্ধ্যায় আবার গেলাম অরচারড রডে। তখন চারিদিকে নিউ ইয়ারের সাজ, রাস্তা, শপিং মল সব আলোয় ঝলমল করছে। অরচারড রোডে তাই হেঁটে ঘুরে বেড়াতে খুব ভালো লাগছিলো। তারপর বাসায় ফিরে আবার ৩জন মিলে বের হলাম রাতের খাবার খেতে। আজকে একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে বিরানি খেলাম আমরা। তারপর রাস্তায় এলোমেলো কিছুক্ষন ঘুরাফেরা করে বাসায় ফিরে গেলাম।
২৭ ডিসেম্বরঃ
আজকে সকাল ১২টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে নাশতা করে যাই ফেরী ঘাটে। বোটে করে আজকে যাবো ইন্দোনেশিয়ার বিন-তান আইল্যান্ডে। যেহেতু ইন্দোনেশিয়ায় অন এরাইভাল ভিসা তাই আগে থেকে ভিসা নেয়ার কোন ঝামেলা নেই। তবে অন্তত ১ দিনের হোটেল বুকিং করে যাবেন যেটার ডকুমেন্টস ইমিগ্রেশনের সময় দেখাতে হয়। তা না হলে ভিসা দিতে অনেক সময় ঝামেলা করে। বোটে করে সিঙ্গাপুর থেকে বিন-তান পৌঁছাতে সময় লাগে ১.৪৫ মিনিটের মতন। আমরা বিকেলে পৌঁছাই বিন তানে। তারপর হোটেল ঠিক করে সেখানে ব্যাগ রেখে বের হয়ে যাই। এখানে আসলে আপনি কোটিপতি হয়ে যাবেন এক রাতেই। কারন এখানে টাকার প্রথম প্রথম হিসেব বুঝতে খুব সমস্যায় পরতে হয়। যাই হোক এখানে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে, খেয়ে দেয়ে হোটেলে ফিরলাম রাতে। আজকের মত শেষ। কাল সকালে বের হব বিন-তানের সৌন্দর্য দেখতে।
২৮ ডিসেম্বরঃ
এদিন সকাল ১০টায় বের হই আমরা। নাশতা করে সারাদিনের জন্য গাড়ী ঠিক করি একটা। গাড়ী বেশ দামাদামি করে ঠিক করতে হয় এখানে। প্রথমে যাই ৫০০ লোহান টেম্পলে। এই জায়গাটা অসাধারন একটা জায়গা। এখানে খুব ভালো লাগবে আপনার যেয়ে। তবে ওখান থেকে লাগুই বীচ যাওয়ার পথে আমাদের ড্রাইভার একটি জায়গায় থামায় আমাদের। আমি জানিনা ঐ জায়গাটার কি বর্ণনা দিব আমি। আমার এই ছবিটি দেখে যদি জায়গাটার সৌন্দর্য, শুনশান মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সম্পর্কে আপনি একটু ও ধারনা যদি পান তাহলে বাকীটুকু নিজের চোখে উপলব্ধি করবেন। জায়গাটার নাম আমি জানিনা ঠিক। বেশ কিছুক্ষন সেখানে থেকে তারপরে লাগুই বীচ, ত্রিকরা বীচ ঘুরে সন্ধ্যায় শহরে ফিরলাম। হোটেলে ফিরে ফ্রেশ হয়ে বের হই আবার। তারপর একটু ঘুরাঘুরি করে খেয়েদেয়ে হোটেলে ফিরে আসি।
২৯ ডিসেম্বরঃ
এদিন ছিল শুক্রবার। আমরা চেকআউট করি। তারপর আমি হোটেলের রিসিপশনে বসি আর মুন্না যায় জুমার নামাজ পড়তে। তারপর খাওয়া দাওয়া করে জেটিতে চলে যাই। সিঙ্গাপুর যাওয়ার শিপে উঠি আর সিঙ্গাপুরে পৌঁছাই বিকেল ৫টায়। তারপর বাসে করে চলে যাই। আজকে আমাদের আগের কাউচসার্ফিঙের হোস্টের বাসায় শেষ দিন। অন্য আরেকটি মালেয়শিয়ান মেয়ের বাসায় ওঠার কথা আজকে। তারপর রাতে সেখানে পৌঁছে ব্যাগ রেখে বের হই ডিনার করার জন্য। খাবার খেয়ে রুমে ফিরে দেই একটা ঘুম। কারন কালকে সকালে সারাদিনের এক বিশাল প্ল্যান আছে।
৩০ ডিসেম্বরঃ
আজকে সকালে ঐ বাসা থেকে বের হয়ে হোস্টেলে উঠি আমরা। হোস্টেলে ব্যাগ রেখে নাশতা করে বাসে উঠলাম। কোথায় যাচ্ছই???
সেন্তোসা!!! ইয়ে ইয়ে ইয়ে
বাস থেকে আমরা নামলাম ভিভ সিটি তে। সেখান থেকে একটু হেঁটে পৌঁছালাম সেন্তোসায়। ওখানে ড্রিম পার্ক, মারলিওন, সেলিসো বীচ, স্কাই ওয়াক, নেচার ওয়াক এগুলো সব দেখলাম ঘুরে ঘুরে। ইউনিভারসেলের সামনে দাঁড়িয়ে পোজ মেরে ছবি তুললাম। তারপর গেলাম টিকেট কাউন্টারে। কিন্তু হায়, টিকেটের দাম দেখে আর ভেতরে যাওয়ার ইচ্ছে হয়নি আমাদের L । যাক অবশেষে সারাদিন ঘুরে ঘুরে হোস্টেলে ফিরলাম রাতের বেলা। আজকের মতন ঘুম। কালকে থার্টি ফাস্ট নাইট। সেটার জন্য শরীরটাকে চাঙ্গা করতে হবে তো।
তখন যদি জানতাম কি দুর্ভোগ টা কপালে আছে কালকে!!!
৩১ ডিসেম্বরঃ
কালকে সারা রাত বৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল থেকেও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পরছে। তার মধ্যেই সকাল ১০ টার দিকে বের হয়ে গেলাম গার্ডেন বায় দে বে দেখার জন্য। হেঁটে হেঁটে এর ভেতরের নানান সব গাছপালা, আইকন দেখলাম। কিন্তু স্কাই ওয়াক করতে পারিনি আমরা। বৃষ্টির কারনে বন্ধ রেখেছিল। দুপুরের দিকে সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম চায়না টাউনে। কিন্তু সেদিন চায়না টাউন ছিল বন্ধ। কি আর করবো এমনিতেই রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করে খেয়ে দেয়ে চলে গেলাম মেরিনা বে তে। বৃষ্টি কিন্তু পরছে। এর মধ্যে কিভাবে ফায়ার ওয়ার্ক হবে আল্লাহ ভালো জানে।
আমরা মেরিনা বে র কাছে এসে দেখি একটা জায়গায় মেলা মতন হচ্ছে। অনেক রকমের মজার মজার খেলা খেলে নানান রকম উপহার পাওয়া যায়। মুন্না একটা খেলা খেলে আমার জন্য কিউট একটা পুতুল জিতলো।
তারপর সেখান থেকে গেলাম রিভার সাইডে যেখান থেকে ফায়ার ওয়ার্ক দেখা যাবে। খুব দেখে শুনে সামনের দিকের ভালো একটা জায়গা খুঁজে নিয়ে বসে পরলাম আমরা। অপেক্ষা থার্টি ফাস্ট নাইটে মেরিনা বে র অসাধারন ফায়ার ওয়ার্ক দেখা। আশে পাশে অনেক হকার অদ্ভুত অদ্ভুত সব জিনিস বিক্রি করছে।
রাত ১১ টা থেকেই নানা রকমের আতশবাজি পুড়ানো শুরু হয়ে গেল। আমাদের কাছে ছাতা ছিলনা। তাই টিপটিপ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দম বন্ধ করে দেখছি সেই আলোর ঝলকানি। কারন এর আগে আমি জীবনে ও এতসুন্দর আলোর খেলা দেখিনি কখনো। কিন্তু ১২ টা বাজার একটু আগেই এমন ঝুম বৃষ্টি শুরু হল যে আর কোন মানুষ দাঁড়াতেই পারলো না খোলা জায়গায়। বৃষ্টি পরছে দেখে আগে থেকেই প্লাস্টিক দিয়ে তাঁবু মতন বানানো ছিল। সবাই গিয়ে তেমন একেক্টায় ঢুকে পরল। ব্যাস থার্টি ফাস্ট নাইটের ফায়ার ওয়ার্ক দেখার শ্রাদ্ধ হল। কাক ভেজা হয়ে গেছি আমরা। রাত ১ টার দিকে সেখান থেকে চলে আসলাম রেফেল স্কয়ার এ। এসে দেখি এমারটি বন্ধ হয়ে গেছে। আকাশ পাতাল এক করে বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে কোন ট্যাক্সি ও পাচ্ছিনা। সারা রাত ২ জন রেফেল স্কয়ার এর স্টেশনে বসে ছিলাম আমরা ভেজা চুপচুপা গায়ে। এইভাবে শেষ হল আমাদের থার্টি ফার্স্ট নাইট যেই রাতের কথা আমাদের মনে থাকবে সারা জীবন।
১ জানুয়ারিঃ
সকালে বাস চালু হলে রেফেল স্কয়ার থেকে বাসে করে ফিরলাম হোস্টেলে। এসে ফ্রেশ হয়ে দিলাম ঘুম। আজকে আমাদের ঢাকা ফেরার কথা। ঘুম থেকে উঠে চলে গেলাম এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্টে ঘুরাঘুরি করলাম, বাটারফ্লাই পার্ক দেখলাম, ফ্রি মাসাজ নিলাম। তারপরে বিকেলে উঠলাম প্লেনে।
এইভাবে শেষ হল আমাদের ১ সপ্তাহের সিঙ্গাপুর ভ্রমন। যেকোনো ভ্রমণের ক্ষেত্রে ট্যুর প্ল্যান করা, কোথায় কোথায় যাওয়া হবে তার লিস্ট করা, কোথায় কতদিন থাকলে ট্যুর টা সুন্দরভাবে কমপ্লিট হবে অর্থাৎ ট্যুরের টোটাল প্ল্যান করাটা সবচেয়ে বেশী ঝামেলার এবং সময় সাপেক্ষ। তাই আপনার পরবর্তী সিঙ্গাপুর ভ্রমনের প্ল্যান করার সময় আমাদের এই ট্যুর প্ল্যানটা কে গাইড হিসেবে ব্যবহার করে নিজের মত করে কাস্টমাইজ করে নিতে পারেন। আমার বিশ্বাস এতে আপনার ট্যুর প্ল্যানের সময় এবং ঝামেলা দুটোই অনেকটুকু কমে যাবে।
সিঙ্গাপুর ট্যুর নিয়ে কিছু জানার থাকলে আমাকে কমেন্ট সেকশনে জানান। অন্য কোন জায়গার ট্যুর প্ল্যান জানতে চাইলে সেটা ও কমেন্টে আমাকে জানাতে পারেন। আমি অবশ্যই আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো।